মো.শরীফ উদ্দিন, আফ্রিকাঃ
আফ্রিকায় প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসি বাংলাদেশিরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
২০২০ সালে মোজাম্বিকে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ না করলেও ২০২১ সালের শুরু থেকে করোনা ভয়াবহ অবস্থা পরিণত হয়েছে।
পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মানিকা প্রভিন্সয়া সিমুইতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মোহাম্মদ হোসাইন নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
জানাযায়, ২ সপ্তাহ পূর্বে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে পুরাপুরি সুস্থ্য মোহাম্মদ হোসাইন। গত ৪ দিন থেকে সর্দি কাঁশিতে ভুগিতেছেন তিনি। তার সাথে থাকা সহযোগীরা তাকে করোনা টেষ্ট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও সে অবহেলা করে। হঠাৎ কাঁশি বেড়ে গিয়ে কাঁশতে কাঁশতে নিজ বাসায় আজ ২২জানুয়ারি শুক্রবার সকাল ৭ টার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিনি।
মোহাম্মদ হোসাইনের দেশের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি ২০১৪ সালে জীবিকার তাগিদে মোজাম্বিকে আসেন।
এদিকে,দেশটির মোজাম্বিকের ইয়ামভানি প্রভিন্সয়া মাবিলা শহরে মোহাম্মদ আলী (৫০) নামে এক বাংলাদেশি করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে।
জানাযায়, মোহাম্মদ আলী এক সাপ্তাহ আগে জ্বর সর্দি নিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে আজ বৃহস্পতিবার ২১জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ৯টার সময় মৃত্যুবরণ করেন।
মোহাম্মদ আলী চট্রগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে মোজাম্বিকে বসবাস করে আসছে। মোহাম্মদ আলী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সৈনিক ছিলেন বলে জানা গেছে।
মোজাম্বিকের মানিকা প্রভিন্সিয়া সিমুই শহরে করোনা উপসর্গ নিয়ে আব্দুল মালেক (মানিক) নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি কয়েকদিন আগে ম্যালেরিয়া চিকিৎসা নিয়ে পুরাপুরি সুস্থ্য হওয়ার আগে জ্বর্র সর্দিতে আক্রান্ত হন। পরে বাসায় করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। ২৪জানুয়ারি রাত ১২ টার সময় হঠাৎ তার শ্বাস কষ্ট বেড়ে গেলে রাত সাড়ে ১২টার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিনি ।
আব্দুল মালেক চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড মরহুম আব্দুল মতলব মিয়ার ছোট ছেলে। তিনি মোজাম্বিকের সিমুই টাউনের একজন ব্যবসায়ী। ১০ বছর ধরে সফলতার সাথে ব্যবসা করে আসছিলেন।
২৩ই জানুয়ারি মোজাম্বিকের মাপুতো প্রভিন্সিয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মাওলানা আবুল কাশেম নামে আরেক বাংলাদেশির শুক্রবার সন্ধা ৭টার দিকে মৃত্যু হয়েছে।
তার দেশের বাড়ি ফেনী জেলায় বলে জানা যায়।
তিনি মোজাম্বিকে দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করে আসছেন। “ইসলামিক ফোরাম অব আফ্রিকা” মোজাম্বিকের মাপুতো প্রভিন্সের মাতোলাগার ইউনিটের সভাপতি ছিলেন তিনি।
মোজাম্বিকের মানিকা প্রভিন্সায় করোনায় মোঃ আব্দুল্লাহ (৩৬) নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন আব্দুল্লাহ।
জানাযায়, গত এক সাপ্তাহ আগে করোনা টেষ্টে পজিটিভ আসলে তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসা নেন। তিন দিন বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার পর শ্বাসকষ্ট, শরীরে ব্যাথা বেড়ে গেলে তাকে সিমুই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিমুই হাসপাতালে তার অবস্থার অবন্তী হলে একদিন পর ১৩ই জানুয়ারি তাকে করোনা হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ১৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
২০০৭ সালে জীবিকার তাগিদে মোজাম্বিকে আসেন তিনি। মোজাম্বিকের মানিকা প্রভিন্সায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী তিনি। পরিবার সহ মোজাম্বিক বসবাস করে আসছেন। তার স্ত্রী, এক মেয়ে এক ছেলে রয়েছে।
মোঃ আব্দুল্লাহর দেশের বাড়ি চট্রগ্রাম জেলায় বাঁশখালী উপজেলা গন্ডামারা ইউনিয়নে পশ্চিম বড়ঘোনা ৫নং ওয়ার্ড হাজী শিফিকুর রহমানের ছেলে।
মোজাম্বিকে করোনায় বাঁশখালীর ৪ ফেনীর ১সহ মোট ৫ বাংলাদেশি মৃত্যু হয়েছে।