চাটখিল প্রতিনিধি ঃ
নোয়াখালীর চাটখিলে হিন্দু (সনাতন ধর্মালম্বী) বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে ফারুক আমিন নামের এক মুসলিম ব্যবসায়ী বন্ধু। স্থানীয় উশৃংখল মুসলমানদের হামলার শিকার হয়ে আহত অবস্থায় ভর্তি হতে হয়েছে হাসপাতাল। সেই সাথে আগুন দেয়া হয়েছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ভাঙচুর করা হয় তার বাড়ি ঘর এবং তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে দুটি হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা।
ফারুক আমিনের বাড়ি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে এবং তিনি উপজেলার দেলিয়াই বাজারের দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা করে আসছে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, গত দুই নভেম্বরে
ফারুক আমিনের বন্ধু রিপন কর্মকারের বাবা মারা যায়। পুরানো শশানটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই দিন তার লাশ দাহ করতে নতুন একটি শ্মশানে নেওয়া হয়। এই নিয়ে ওই শ্মশানের পাশে থাকা মরহুম শরবত আলী দরবেশ সাহেবের কবর এবং একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ থাকায় তার স্বজনরা এবং মসজিদের কিছু মুসল্লী ওখানে লাশ পোড়াতে বাধা দেয়।একপর্যায়ে তা মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। বন্ধুত্বের সূত্রে ফারুক আমিন তখন ওইখানে উপস্থিত থাকায় ঘটনায় প্রতিবাদ করে। এতে উশৃংখল মুসলমানদের একটি অংশের হামলার শিকার হয়ে ফারুক আমিন আহত হয়। আহত ফারুক আমিন কে তার সজনরা গোপনে চিকিৎসা করায় বলে জানা যায়। এদিকে উশৃংখল মুসলমানরা ফারুক আমিনের বিরুদ্ধে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। ঘটনার পরের দিন আন্দোলনকারীর মুসল্লীরা জোহরের নামাজ শেষে একটি মিছিল নিয়ে তার বাড়িতে হামলা করে ও পরে দেলিয়াই বাজারে থাকা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি সংযোগ করে । পরে চাটখিল ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এতে তার দোকানের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন রাব্বি আগুনে পুড়ে আহত হয়। এই দুটো ঘটনায়ই উল্টো ফারুক আমিন কে দায়ী করে একটিতে হত্যা মামলায় অপরটিতে হত্যা চেস্টার মামলা করা হয়।
ফারুক আমিন সাংবাদিকদের ফোনে জানান, আমি আজ নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার পরিবারসহ আমরা এখন পুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি এই ঘটনায় পুরো নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি জাহাঙ্গীর আলমের ভাগিনা নোয়াখালী জেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা মাসুদুর রহমান শিপনের বিরুদ্ধে। তিনি মনে করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিপনওতার বাহিনীর লোকজন ব্যাপারটাকে আরো ঘোলাটে করছে। শিপনের সাথে তার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থাকার কারণে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে এখন তারা আমাকে হত্যা করতে চায়।ফারুক আমিন জীবনের নিরাপত্তা চান রাষ্ট্রের কাছে।
এই ঘটনার বিষয়ে এই প্রতিবেদক কথা বলে নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি গোলাম সারোয়ার এর সাথে। তিনি জানান, ফারুক আমিনের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। হিন্দু বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন। সেই সাথে তার দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ি ঘরে হামলাকরা হয়েছেএবং একজন নিরীহ পথচারীকে মারা হয়েছে। অথচ তারই বিরুদ্ধে উল্টা দুটো মামলা দেয়া হয়েছে। গোলাম সারোয়ার এই ঘটনায় পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকা কে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে চাটখিল থানা পুলিশের এই মিথ্যা মামলা রুজুর তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাটখিল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।